প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভোট চুরি করলে যে ক্ষমতায় থাকা যায় না , ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়ার পদত্যাগই তার প্রমাণ। আজ শনিবার (১৫ই জুন) গণভবনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে দেশের গণতান্ত্রিকধারা নষ্ট করেছিলো সামরিক শাসকরা। জিয়া ক্ষমতায় এসে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছিলো। ক্ষমতায় বসে দল গঠন করে ভোট চুরি করে জিয়া ক্ষমতায় আসে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে কৃষকদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, হত্যা করে কৃষককে। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলো। কিন্তু ভোট চুরি করলে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারে না, খালেদা জিয়াকেও চলে যেতে হয়েছে। তারা এখন ভোট ও গণতন্ত্রের কথা বলে।
বিএপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার খুব হাসি পায়, যখন দেখি বিএনপি ভোটের কথা উচ্চারণ করে, নির্বাচনের কথা বলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একাধারে সেনাপ্রধান, তারপর আবার নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী প্রহসন। ক্ষমতার মসনদে বসেই দল গঠন। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দলটি গঠন করে, তাকে আবার জিতিয়ে আনার জন্য ভোট চুরির একটা প্রক্রিয়া এ দেশের শুরু করেছিল।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের পরে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে এরশাদ ক্ষমতায় এসে জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এ দেশের কৃষক-শ্রমিকরা সব সময় অবহেলিতই থেকে যায়। এরপর আসলো খালেদা জিয়া। সেও ক্ষমতায় আসার পর দেখা গেল, শুধু জনগণের ভোট চুরি করাই না, দেশের কৃষকের ভাগ্য নিয়েও ছিনিমিনি খেলে; সার পাওয়া যাচ্ছে না, কৃষক আন্দোলন করেছে। আন্দোলন করার অপরাধে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিল।’
অপকর্মের কারণে বিএনপির বিরুদ্ধে মানুষ ফুঁসে ওঠে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটা প্রহসনমূলক নির্বাচন হয়, খালেদা জিয়া সেই নির্বাচনে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে। মাত্র ২২ শতাংশ ভোট পড়েছিল সেখানে। সরাসরি নির্বাচিত কোনো প্রতিপক্ষ ছিল না। কিন্তু জনগণের ভোট চুরি করলে কেউ কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ এ ব্যাপারে খুব সচেতন।’
জিয়াউর রহমান বৃক্ষনিধন শুরু করেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘ঠিক হোটেল শেরাটনের সামনে একটা আইল্যান্ড আছে, সেখানে নাগকেশর ফুলের গাছ ছিল। সেখান দিয়ে গাড়ি নিয়ে বা হেঁটে গেলে খুব সুন্দর খুশবু আসত। চমৎকার সবুজে ভরা ছিল। সেগুলো জিয়াউর রহমান কেটে ফেলে দেয়। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশে বিরাট বাগান বিলাশের ঝাড় ছিল, সেখানে অনেক টুনটুনি পাখি ছিল। আমরা ছোটবেলায় রুটি নিয়ে ওখানে যেতাম, ওদের খাবার দিতাম। সেটাও কেটে ফেলে। এভাবে সারা বাংলাদেশে বৃক্ষনিধন এটাও কিন্তু তাদের একটা চরিত্র এবং তার আরেকটা নমুনা আপনারা পেয়েছেন ২০১৩ সালে।’
আওয়ামী লীগই প্রথম বৃক্ষরোপণ শুরু করে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগই বোধ হয়, আমি জানি না—এই উপমহাদেশে কেন, পৃথিবীর যেকোনো দেশের, যেকোনো দলের কর্মসূচিতে দেখবেন যে, পরিবেশ রক্ষার জন্য বৃক্ষরোপণ, এটা আওয়ামী লীগই শুরু করে।’
এ সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের গাছ লাগানোর আহ্বান জানান। তিন ফসলি জমি নষ্ট করে কোনো শিল্পায়ন হবে না বলেও সাফ নির্দেশ দেন। কৃষি সেচ পুরোটাই সৌর বিদ্যুৎনির্ভর করার সরকারের পরিকল্পনার কথাও জানান সরকারপ্রধান।